বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:২৪ অপরাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক: ব্যাংকের আমদানি ঋণপত্র বা এলসি দায় পরিশোধে বিলম্ব করছে বেশ কিছু ব্যাংক। যার কারণে বাংলাদেশের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে আমদানি দায় পরিশোধে বিলম্বকারীদের জন্য কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আগামী ৭ দিনের মধ্যে ব্যাংকগুলোর সব ওভারডিউ বা মেয়াদোত্তীর্ণ এলসির দায় পরিশোধ করতে হবে।
নির্ধারিত সময় দায় পরিশোধে ব্যর্থ হলে তার কারণ জানাতে হবে। পাশাপাশি এখন থেকে এলসির দায় বিলম্ব হলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাও শাস্তির আওতায় আসবে। এ বিষয়ে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহীদের চিঠি দিয়েছে কিন্দ্রীয় ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
কেন্দীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, বৈশ্বিক মহামারী কভিড- এর সময় আমাদনি ঋণপত্র বা এলসি দায় পরিশোধে সুবিধা দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এখন বৈশ্বিক মহামারী নেই তারপরও কিছু ব্যাংক দায় পরিশোধে বিলম্ব করছে। এই তালিকায় এস আলমের নিয়ন্ত্রণে থাকা ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলো অন্যতম। এখন প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ডলারের মত মেয়াদোত্তীর্ণ এলসির দায় রয়েছে।
যার কারণে বাংলাদেশের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। বেড়ে যাচ্ছে আমদানি এলসির খরচ। তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংক আগামী ৭ দিনের মধ্যে সব আমাদানি দায় পরিশোধ করতে বলা হয়েছে। এমন চিঠি এমডিদের পাঠানো হয়েছে।
ওই চিঠিতে বলা হয়েছে পর্যাপ্ত ডলার না থাকলে প্রয়োজনে ডলার কিনে দায় পরিশোধ করতে হবে।
নির্ধারিত সময় যদি কোনো ব্যাংক দায় পরিশোধে ব্যর্থ হয় তাহলে এর যথাযথ কারণ জানাতে হবে। এছাড়া এখন থেকে কোনো ঋণপত্র খোলার আগে গ্রাহকের ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা যাচাই করে খুলতে হবে। যদি দায় পরিশোধে ব্যর্থ হয় তাহলে এলসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকেও শাস্তির আওতায় আনা হবে।
এদিকে মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) একটি সার্কুলার জারি করে এলসি দায় পরিশোধে বিলম্বকারীদের জন্য বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা ও নীতি বিভাগ।
নিয়ন্ত্রণ সংস্থাটি জানায়, এলসির দায় পরিশোধে বিলম্বের কারণে বাংলাদেশের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। যার ফলে আমদানি ব্যয় চার্জ ও বিভিন্ন খরচ বেড়ে যাচ্ছে। তাই এখন থেকে এলসি খোলার আগে গ্রাহকের ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা নিশ্চিত করতে হবে। যদি কোনো দায় পরিশোধের অর্থ না থাকে তাহলে কোন উৎসহ থেকে অর্থায়ন হবে তা নিশ্চিত করতে হবে। কোনো মতেই মেয়াদোত্তীর্ণ এলসি গ্রহণযোগ্য হবে না। সময়মতো পেমেন্ট নিষ্পত্তি করতে ব্যর্থ হলে লেনদেনের জন্য দায়ী কর্মকর্তার জবাবদিহিতা পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগে সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর ১৭টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের এমডির সঙ্গে বৈঠক করেন।
এমডিরা জানান, ডলার মার্কেটে আগের চেয়ে উন্নতি হয়েছে। জানুয়ারি পর্যন্ত আরো উন্নতি হবে। বর্তমানে ডলার মার্কেটে চ্যালেঞ্জ না থাকলেও ওভারডিউ বা মেয়াদোত্তীর্ণ এলসির দায় পরিশোধে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। কিছু ব্যাংক এলসির দায় যথাযথ সময় পরিশোধ করছে না। এতে করে অন্য ব্যাংকগুলো সমস্যায় পড়ছে।’
এ বিষয়ে গভর্নর বলেন, ‘ডলার মার্কেটে কেউ যাতে কারসাজি না করে। কোনো ব্যাংক যাতে বেশি দরে বিক্রির জন্য ডলার ধরে না রাখে। আবার ক্রস কারেন্সিতে ট্রান্সফার করে লাভবান হওয়ার চেষ্টা না করে। ভবিষ্যতে যেসব ব্যাংক এলসির দায় পরিশোধে বিলম্ব করবে তাদের বিরুদ্ধে প্রসাশনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাদের এলসি খুলতে দেওয়া হবে না।’